সাদিক কায়েম: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রশিবিরের সভাপতি, তার রাজনৈতিক উত্থান এবং বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা।
সাদিক কায়েম
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ বিভিন্ন অনলাইন পোর্টালে ভেসে বেড়াচ্ছে একটি নাম, “সাদিক কায়েম”। অথচ গতকাল পর্যন্ত এই নামটি ছিল সম্পূর্ণ অজানা।
হঠাৎ করে কেন এই নামটি সামনে এসেছে? কেই বা এই সাদিক কায়েম?
জানতে হলে দেখতে হবে পুরো ভিডিওটি। সাদামাটা দেখতে একজন ছেলে, পরনে পাঞ্জাবি, গালে হালকা দাড়ি। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রশিবিরের সভাপতি হিসেবে পরিচিত সাদিক কায়েম।
সাদিক কায়েমের পরিচয়
তার নাম সাদিক কায়েম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী। গ্রামের বাড়ি খাগড়াছড়ি শহরের বাজার এলাকায়। মেধাবী এই তরুণ শিক্ষাজীবনের শুরু থেকেই সাফল্য অর্জন করেছেন।
খাগড়াছড়ি বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া আদর্শ মাদ্রাসা থেকে দাখিল এবং পরবর্তীতে চট্টগ্রামের বায়তুশ শরফ থেকে কামিল পাশ করেন তিনি। পরে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।
তার শিক্ষা এবং রাজনৈতিক ক্যারিয়ার
সাদিক কায়েম স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে নিজ বিভাগের মধ্যে তৃতীয় স্থান অধিকার করেন। স্নাতকে তার সিজিপিএ ছিল ৩ দশমিক ৭৮, যদিও স্নাতকোত্তরের সিজিপিএ জানা সম্ভব হয়নি।
শিক্ষাজীবন ছাড়াও, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামী ছাত্র শিবির এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ছিলেন।
সম্প্রতি প্রকাশ্যে আসা
শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে নিজের টাইমলাইনে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে প্রকাশ্যে আসেন সাদিক কায়েম। স্ট্যাটাসে তিনি নিজেকে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন।
তিনি আরও জানান, দীর্ঘদিন পর ক্যাম্পাসে ইসলামী ছাত্রশিবির প্রকাশ্যে রাজনীতিতে যোগ দিচ্ছে।
রাজনৈতিক অবস্থান এবং বক্তব্য
এক আলোচনা সভায় তিনি প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেন। সেখানে তিনি ফ্যাসিস্ট শাসনের কঠোর সমালোচনা করেন এবং বর্তমান রাজনৈতিক পরিবেশকে বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, ‘ফ্যাসিবাদে কোন রাজনীতি থাকে না, শুধুমাত্র ফ্যাসিবাদই থাকে’।
তিনি বলেন, ‘টেন্ডারবাজি, গুম, খুন, ক্রসফায়ার, ফাঁসি, ধর্ষণ, রাহাজানি, দুর্নীতি এসব রাজনীতি নয়’।
বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
তিনি উল্লেখ করেন, গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর আওয়ামী ফ্যাসিবাদের ১৬ বছরের শাসনামলে রাজনীতি এবং তরুণ প্রজন্মের মধ্যে তীব্র ঘৃণার জন্ম হয়েছে। কিন্তু ২০২৪ সালের ৩১শে জুলাই সরকার জামায়াতে ইসলামকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। দীর্ঘ ১৭ বছর পর ইসলামী ছাত্রশিবির প্রকাশ্যে আসে।
তার আগমন রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করবে কি না, তা সময়ই বলে দেবে।
কথোপকথনে যোগ দিন